সুন্দরগঞ্জে ক্লাস বন্ধ রেখে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় একের পর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ রেখে দলীয় কার্যক্রম চালিয়েছে বিএনপি। পাঠদান স্থগিত করে এই রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে বিপাকে পড়েছেন শত শত শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যেতে বাধ্য হয় শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, স্কুল প্রাঙ্গণে মাইকের উচ্চ আওয়াজে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উপজেলার শিবরাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ধুবনী স্কুল, হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিএনপির সদস্য নবায়ন, নতুন সদস্য সংগ্রহ ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কাজ চলে। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।

এলাকার সচেতন মহল জানান, এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এর আগে মঙ্গলবারও তিন ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই ধরনের কর্মসূচি পালিত হয়। আরও ভয়াবহ তথ্য হলো, বৃহস্পতিবার আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে এই অনৈতিক কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজকুমার বিশ্বাসের বক্তব্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দলীয় কর্মসূচি করার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম মাহাবুবুল ইসলাম তার বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানকেই এমন কাজের অনুমতি দেওয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিষিদ্ধ। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি নেতারা এই ইস্যুতে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি। উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুল ইসলাম প্রামাণিক প্রাথমিকভাবে বিষয়টি দেখবেন বলে জানালেও পরবর্তীতে তার সাথে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের সাথে এই ধরনের রাজনৈতিক খেলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সুশীল সমাজ ও শিক্ষা অঙ্গনের ব্যক্তিরা। তাদের দাবি, যেন আর কখনও শিক্ষার পবিত্র পরিবেশ এভাবে বিঘ্নিত না হয় এবং দায়িত্বশীলরা যেন এই অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেন।

0Shares