রাঙামাটিতে অক্সিজেনের অভাবে শিশুর মৃত্যু!

রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাবে নির্মম মৃত্যু হয়েছে রিমলি চাকমা নামে একমাস বয়সী পাহাড়ি ছোট্ট শিশুর।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  এ শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটির বাবা রিটন চাকমা ও স্বজনের অভিযোগ হাসপাতালে কোন অক্সিজেন সিলিন্ডার না থাকায় যথাসময়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। পরে বিকল্প উপায় সিপিআর দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি। কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ্যাম্বুলেন্স চালক অনুপম চাকমা বলেন গাড়ীর চাকা ও ব্যাটারি নষ্ট তাই রোগী পরিবহন সেবা বন্ধ রয়েছে। আরএমও স্যার নেই তাই টাকার জন্য চাকা ব্যাটারি নিতে পারছি না।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরিন আক্তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার এর পাশাপাশি ডাক্তারের সংকট রয়েছে, একটি মাত্র এ্যাম্বুলেন্স সেটিও নষ্ট, ১৬ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৪ জন। এরাও ঠিক মত উপস্থিত থাকেনা। উর্ধতন কর্মকর্তাকে বার বার জানিয়েও কোন প্রতিকার মিলছে না।

রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডাঃ নূয়েন খীসা জানিয়েছেন, নির্মম এই ঘটনাটি আমি জেনেছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিস্তারিত তুলে আনার চেষ্ঠা করবো। এতে কেউ দোষী হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

তিনি জানান, বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন মেডিকেল অফিসার পদায়ন করা হয়েছে তিনি এখনো যোগদান করেননি। হাসপাতালে একজন কর্তা দরকার সেটিও নেই; বারবার বলার পরও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইওএইচএফপিও) যোগদান করেননি।

সিভিল সার্জন জানান, রাঙামাটিতে ১০৩জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে রয়েছে সর্বসাকুল্যে ৬৩ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই কর্মস্থলে উপস্থিত থাকে না। তাদেরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলেও তারা সেটি মানছেন না। ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে শোকজও করা হয়েছে।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালেও করুণ অবস্থা বিরাজ করছে। হাসপাতালের অতি প্রয়োজনীয় আয়া ক্লিনার এর প্রায় সবগুলো পদই খাল রয়েছে। সংকট মোকাবেলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা নিজেদের বেতন-বোনাসের টাকা দিয়ে প্রায় ২৬ জনকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে স্বাস্ব্যসেবা চালিয়ে নিচ্ছেন। চলমান এই সংকট অতিশীঘ্রই সমাধানে উদ্যোগ না নিলে আগামী এক মাসের মধ্যেই রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

0Shares