ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সালামের গুরুত্ব-ফজিলত

মুসলিম উম্মাহর পারস্পরিক অভিবাদন ও ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নত আমল হলো সালাম। সালাম ব্যক্তি জীবনে পরকালীন সওয়াব অর্জনের পাশাপাশি সমাজে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার না হবে, তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পরস্পরের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দ স্থাপন করবে। আমি কী তোমাদের এমন বিষয়ের কথা বলব না, যা করলে তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হবে? সাহাবিরা বললেন, নিশ্চয় ইয়া রাসূলাল্লাহ! (তিনি বললেন) ‘তোমাদের মধ্যে বহুল পরিমাণে সালামের প্রচলন করো’। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর: ৮১)

সালাম দেওয়া যেমন গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল, তেমনি এর জবাব দেয়াটাও ওয়াজিব। আল্লাহ আমাদের আদেশ করেছেন সালামের জবাব যেন সালামপ্রদানকারীর চেয়েও সুন্দরভাবে অথবা সমান পরিমাণে দেই।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তোমরাও অভিবাদন জানাও তারচেয়ে উত্তমভাবে অথবা তারই মতো করে ফিরিয়ে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে হিসাব-নিকাশ গ্রহণকারী’। (সূরা: নিসা, আয়াত: ৮৬)

অধিকাংশ আলেমের মতে, ‘আসসালামু আলাইকুম’ এর জবাবে বলা উচিত ‘ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ।’ ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’র জবাবে বলতে হবে ‘ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।’ ‘আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’র জবাবে এর চেয়ে উচ্চস্বরে ও আনন্দিত স্বরে বলতে হবে ‘ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’। তবে এর চেয়ে বাড়িয়ে জবাব দিতে হাদিসে অনুৎসাহিত করা হয়েছে।

নিম্নের হাদিস থেকে বোঝা যায় সালামের সাওয়াব বৃদ্ধি পায়-

ইমরান বিন হুসাইন বর্ণনা করেন, ‘এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর কাছে এসে বললো আসসালামু ‘আলাইকুম। তিনি (সা.) বললেন, ‘দশ’। আরেক ব্যক্তি এসে বললো আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। তিনি (সা.) বললেন, ‘বিশ’। আরেক ব্যক্তি এসে বললো আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। তিনি বললেন, ‘ত্রিশ’। (জামে তিরমিযী)

0Shares