
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে স্থাপিত সরকারি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎবিহীন জরাজীর্ণ ভবনে দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীরা ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন বছরের পর বছর। এসব ভবনে নেই শৌচাগার, খসে পড়ছে ছাদের পলেস্তারা। খুলে গেছে দরজা, ঝুলে আছে জানালার কপাট। ঝরে গেছে দেয়ালের আস্তরণ। ছোটবড় অসংখ্য ফাটল ধরেছে ভবনের প্রায় জায়গায়। নোংরা মেঝেতেও স্পষ্ট ফাটল। সুপেয় পানির অভাব। নেই নলকূপ।
রবিবার (০৩ আগস্ট) উপজেলার আমুচিয়া, কড়লডেঙ্গা, পোপাদিয়া, চরণদ্বীপ, শাকপুরা ও সারোয়াতলী ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। এ বেহাল দশার মধ্যে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে প্রতিদিন ভিড় জমান গ্রামের সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জ্বর, কাশি, ডায়রিয়াসহ শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা, সাধারণ রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এছাড়া রোগ প্রতিরোধ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা, টিকাদান, পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক পরামর্শ ও সেবা প্রদান করা হয় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
আমুচিয়া ধোরলা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরাজীর্ণ ভবনে চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন বলেন, জরাজীর্ণ ভবনে নানা প্রতিকূলতা থাকায় বছরের পর বছর ধরে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী। অনেকে ভয়েও আসতে চান না এসব কেন্দ্রে।
ধোরলা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে ১৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালনরত কার্ডিওগ্রাফার মো. জাবেদ বলেন, বৃষ্টি হলে ছাদ চুয়ে, দেয়াল বেয়ে পানি ঢোকে ভবনে। বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। গরম আর অন্ধকারের মধ্যে চিকিৎসাসেবা দিতে হয়। শৌচাগার নেই। এমনকি খাবার পানিও বাইরে থেকে এনে পান করতে হয়। এমন পরিবেশে কাজ করা কষ্টকর। প্রায় ১০০ বছরের পুরনো এ ভবনের সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণের বিষয়ে প্রতিবছরই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, উপজেলার ৬টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ভবন মেরামত অযোগ্য হওয়ায় ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে পুনর্নির্মাণের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে।