
আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দিনাজপুরের রাজনীতির মাঠ। বিএনপির প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর থেকেই জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৪টিতেই ছড়িয়ে পড়েছে চরম অসন্তোষ। দলীয় প্রার্থীর নাম পরিবর্তনের দাবিতে রাজপথে নেমেছেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা। কোথাও মহাসড়ক অবরোধ, কোথাও মশাল মিছিল, আবার কোথাও কাফনের কাপড় পরে ও গলায় ফাঁসির দড়ি ঝুলিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
বিএনপির এই চরম অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে পুঁজি করে প্রতিটি আসনেই নিজেদের জয়ের সম্ভাবনা দেখছে জামায়াত ইসলামী। দলটির দাবি, বিএনপির বিভক্তির সুযোগে ভোটাররা জামায়াতের পাল্লায় ঝুঁকবেন।
দিনাজপুর-৫ (পার্বতীপুর- ফুলবাড়ী)- এই আসনে সাবেক এমপি এজেডএম রেজওয়ানুল হককে বাদ দিয়ে একেএম কামরুজ্জামানকে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সমর্থকরা। ১১ডিসেম্বর পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আকরাম হোসেন জানান, যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিলে কঠোর কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তবে কামরুজ্জামানের দাবি, মুষ্টিমেয় কিছু লোক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ)- সাদিক রিয়াজ চৌধুরী পিনাককে মনোনয়ন দেওয়ায় এই আসনে মনোনয়নবঞ্চিত মোজাহারুল ইসলাম ও মঞ্জুরুল ইসলামের সমর্থকরা কাফনের কাপড় পরে ও গলায় প্রতীকী ফাঁসির দড়ি লাগিয়ে মানববন্ধন করেছেন। তাদের অভিযোগ, পিনাক আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে গোপন আঁতাত রাখছেন। যদিও পিনাক এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন দাবি করেছেন।
দিনাজপুর-১ ও দিনাজপুর-৪- দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনে মনজুরুল ইসলাম এবং ৪ আসনে (খানসামা-চিরিরবন্দর) আখতারুজ্জামান মিয়ার মনোনয়ন মানতে পারছেন না স্থানীয় নেতারা। সাবেক এমপি আব্দুল হালিম ও মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর দাবি, প্রার্থী পরিবর্তন না করলে এসব আসন বিএনপির হাতছাড়া হবে।
তবে, দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনের চিত্র ভিন্ন। এখানে স্বয়ং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রার্থী হওয়ায় বিভেদ ভুলে একাট্টা হয়েছেন নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন পর এই আসনে দলীয় প্রধানের প্রার্থিতা তৃণমূলের মাঝে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান বলেন, বিএনপি চারদিকে বিভক্ত। সদর আসনে খালেদা জিয়া প্রার্থী হলেও আমাদের শক্ত অবস্থান আছে। মাঠের পরিবেশ আমাদের অনুকূলে।
দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল বলেন, বড় দলে প্রতিযোগিতা দলের গ্রহণযোগ্যতারই প্রমাণ। কেন্দ্র চাইলে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে। অন্য দলের সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই।




