ছাত্রদলের শোচনীয় বিপর্যয়ের কারণ খুঁজছে বিএনপি

ডাকসুর পর জাকসু নির্বাচনেও ছাত্রদলের ধারাবাহিক বিপর্যয় বিএনপি হাইকমান্ডের মধ্যে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। ছাত্র সংগঠনটির প্রতি শিক্ষার্থীদের সমর্থন হারানোর কারণগুলো অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ করতে দফায় দফায় বৈঠকে বসছেন দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। এই অপ্রত্যাশিত হারে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তারা।

দলের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, এই পরিস্থিতিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহ করে ৯ সেপ্টেম্বর রাতেই স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ব্যর্থতার কারণ খুঁজতে শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

তবে প্রতিপক্ষের চতুর কৌশলই মূলত এই শোচনীয় পরাজয়ের পেছনে দায়ী বলা হলেও নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতাকেও এ পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন তারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, দীর্ঘ সময় পর নির্বাচন হওয়ায় কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল, তবুও তিনি বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এটাকেই তিনি গণতন্ত্র বলে আখ্যা দেন।

অন্যদিকে, বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেছেন, ছাত্রলীগের সঙ্গে আঁতাত করেই ডাকসুতে বিজয়ী হয়েছে ছাত্রশিবির।

তবে বিশ্লেষকদের মতে, গত বছর ৫ আগস্টের পর সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের ছায়া এবং দলীয় লেজুরবৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির প্রভাবের কারণে এই নির্বাচনে ছাত্রদলের পতন হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে অভ্যন্তরীণ বিভাজন, গ্রুপিং এবং সমন্বয়ের অভাবকেও তারা এই পরাজয়ের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, ছাত্রদল শিক্ষার্থীদের মাইন্ডসেট সঠিকভাবে বুঝতে পারেনি। ৫ আগস্টে স্বৈরাচার পতনের পর ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা আর কারো চোখরাঙানি মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। ছাত্রশিবিরের শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচির কাছে ছাত্রদল অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। এছাড়া অতীতেও ছাত্রদলের কিছু বিতর্কিত ইতিহাস রয়েছে, আর গত এক বছরে চাঁদাবাজি ও ধর্ষণের খবরও এসেছে তাদের বিরুদ্ধে।

তারা মতে, ছাত্রদলের এই পরাজয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্রদল, যুবদল বা বিএনপি নেতাকর্মীদের নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের নেতিবাচক প্রভাবও ছিল। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাদের প্রতি আকর্ষণ কমেছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন বলেন, নির্বাচনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, জামায়াত ও আওয়ামীপন্থী কিছু কর্মকর্তা মিলে কাজ করায় ছাত্রদলের বিপর্যয় হয়েছে।

0Shares