চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে চলছে পাঠদান।
সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১০৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নেই প্রধান শিক্ষক। পাশাপাশি ৫৮টি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য। কয়েকটি বিদ্যালয়ে রয়েছে মামলা সংক্রান্ত জঠিলতা।
সচেতন অভিভাবকদের মতে, শিক্ষার প্রথম ধাপ প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখান থেকেই একটি শিশু তার শিক্ষাজীবনের ভিত্তি স্থাপন করে। কিন্তু এ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যদি পাঠদানে ঘাটতি থাকে তবে শিশুদের ভবিষ্যৎ কতটা দৃঢ় হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শূন্যপদগুলোতে দ্রুত নিয়োগ দিয়ে সংকট নিরসনের দাবি জানান তারা।
চাঁন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ, দাপ্তরিক নথিপত্র প্রস্তুত, অফিসিয়াল যোগাযোগ- এসব মৌলিক কাজগুলোতে দেরি ও জটিলতা দেখা দিচ্ছে। ফলে দীর্ঘমেয়াদি শিক্ষা পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধানকে একই সঙ্গে ক্লাশরুম শিক্ষাদান এবং প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাতে হয়, ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি, শৃঙ্খলা এবং একাডেমিক মনিটরিং ঠিকভাবে বজায় রাখা যাচ্ছে না। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে শিক্ষার মান ও পরীক্ষার ফলাফলে।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি উপজেলা শাখার সভাপতি ও মধ্য পুটিবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রায় ১ যুগ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পদোন্নতি বন্ধ থাকায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ায় সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
প্রশাসনিক কাজ ও শিশু শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঠদান একই সঙ্গে অসম্ভব। দায়িত্ব হিসেবে এখানে দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। তাই একদিকে গেলে অন্যদিক ব্যাহত হচ্ছে। তবে শূন্যপদগুলো পূরণ হয়ে গেলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশাবাদী তিনি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম আব্দুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। মামলা সংক্রান্ত সৃষ্ট সমস্যায় পদোন্নতি ও নিয়োগ দুটোই আটকে আছে। এসব সংকট নিরসনের লক্ষে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
