রাঙামাটিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

স্বামীর পরকীয়া দেখে ফেলায় স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িত ঘাতক স্বামী উচাইল্যা মারমাকে যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ দিয়েছেন রাঙামাটির জেলা দায়রা ও জজ আদালত।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে রাঙামাটির সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো: আহসান তারেক এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসামীকে যাবজ্জীবন দন্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সাজার আদেশও দিয়েছেন আদালত।

রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: জয়নাল আবেদিন রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

রায় ঘোষনার সময় আসামী বা তার পক্ষের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। আসামী উচাইলা মারমা পলাতক রয়েছেন।

মামলার নথি থেকে জানা গেছে, বিগত ১৯৮৬ সালের দিকে রাঙামাটি জেলার কাউখালী উপজেলাধীন বড়তলি পাড়া এলাকায় জনৈক থোয়াই অং মারমার সন্তান উচাইলা মারমার সাথে একই উপজেলাধীন বড়ডলু এলাকার কংহলা মারমার কন্যা নাইচাই মারমা সাথে বিবাহ হয়। ২০০১ সালের দিকে উচাইলা মারমা নিজ স্ত্রীকে রেখে এলাকার মিনু মারমা নামক এক নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। স্বামীর পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পারে নাইচাই মারমা। এতে তাদের দাম্পত্য কলহের শুরু হয়।

এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উচাইলা মারমা ২০০১ সালের ২ জুলাই স্ত্রী নাইচাই মারমাকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।

এই ঘটনার পর নিহতের ভাই উষা থোয়াই মারমা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ প্রায় ২৪ বছর পর বুধবার (১৩ জুলাই) এই মামলায় সাক্ষী প্রমানের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ঘাতক স্বামী উচাইলা মারমাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।

রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর সিনিয়র আইনজীবি অ্যাডভোকেট প্রতীম রায় পাম্পু জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর থেকে আসামী পলাতক রয়েছে। এই মামলায় সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামীর বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন সাজার পাশাপাশি আরো ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের আদেশ দিয়েছেন। জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করলে আরো ৬মাস সাজার কথাও আদেশে উল্লেখ করেছেন আদালত।

0Shares