
বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চরম ডাক্তার ও নার্স সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রায় দুই লাখ মানুষের ভরসাস্থল এই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় জনবল সংকটে ভুগছে।
হাসপাতালে ২২টি চিকিৎসক পদের বিপরীতে মাত্র ২ জন কর্মরত রয়েছেন, ৩২টি নার্স পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ৮ জন। এছাড়া ৬ জন কনসালটেন্ট ও ১২ জন মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে। উপসহকারী মেডিকেল অফিসারদের ৪টি পদের মধ্যে ৩ জন কর্মরত।
অ্যাম্বুলেন্সের অবস্থাও বেহাল। দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি দীর্ঘ এক যুগ ধরে অচল, অন্যটি ব্যবহারের অযোগ্য অবস্থায় চলছে। এছাড়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে সাম্প্রতিক বন্যায় আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, ইসিজি, অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিনসহ ল্যাবের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। জেনোরেটর না থাকায় অনেক রোগী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছেন না।
উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে হাসপাতাল থাকলেও পর্যাপ্ত ওষুধ, ডাক্তার ও নার্সের অভাবে দরিদ্র ও অসহায় রোগীরা প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে অনেক রোগীকে বাধ্য হয়ে পাশের চকরিয়া উপজেলায় চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয়, যা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য। অনেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বা মৃত্যুর মুখে পড়ছেন।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা নাদিম জানান, প্রতিদিন গড়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগী এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন এবং ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। বর্তমানে হাসপাতালটি চরম জনবল সংকটে ভুগছে, তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস পাওয়া হয়েছে।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই জানান, লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সকল সমস্যা লিখিত আবেদনের মাধ্যমে জানাতে নির্দেশ দিয়েছি। লামা হাসপাতালের সমস্যা সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হবে।