
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ৩৮টি ইটভাটার মধ্যে ৩৭টির বৈধ কাগজপত্র নেই। এসব ভাটায় মাটি কেটে ড্রাম চিমনি ও সাধারণ মানের চুল্লীতে কাঠ পুড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কৃষিজমি ও লোকালয়ে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ইটভাটা গুলো ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি ও কাঁচামাল সংগ্রহ করা হচ্ছে। কয়েকটি ইটভাটা ইতিমধ্যে পোড়ানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। উপজেলার সবচেয়ে বেশি ইটভাটা রয়েছে চরম্বা ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নে ১৮টি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। পাহাড়ি কাঠের সহজলভ্যতা এবং তুলনামুলক কমদামে পাহাড়ি মাটি ব্যবহার করতে পারার কারণে এই ইউনিয়নে ইটভাটা বেশি স্থাপিত হয় বলে দাবি স্থানীয়দের।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রহস্যজনক কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে এসব ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য বনের গাছ উজাড় হচ্ছে। এছাড়া সারা বছর এসব ইট ও ইট তৈরির কাঁচামাল পরিবহনে ব্যবহৃত গাড়ি গ্রামীন সড়ক গুলো সড়কগুলো দ্রুত নষ্ট করে ফেলছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে উঠা এসব অবৈধ ইটভাটা দ্রুত অপসারণ করা না হলে, একদিন লোহাগাড়া বসবাসের অনুপযোগী ভূমি হয়ে দাঁড়াবে। ইটভাটার মালিকরা টাকা ওয়ালা হওয়ায় তাদের কাছে সবাই ম্যানেজড হয়ে যায় বলেও তাদের অভিযোগ।
লোহাগাড়া উপজেলার কয়েকজন ইটভাটার মালিক জানিয়েছে, অধিকাংশ ইটভাটার পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র, জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নেই। ইতোমধ্যে ইটভাটার মালিকরা লাইসেন্স সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।
পরিবেশ কর্মী সানজিদা রহমান বলেন, অবৈধ ইটভাটাগুলো দ্রুত সময়ে বন্ধ করা হোক। এগুলো বন্ধ হলে আমাদের পরিবেশ প্রাণ ফিরে পাবে।
লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বৈধ কোনও কাগজপত্র ছাড়া ইটভাটা করা যাবে না। পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে খুব দ্রুত অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোজাহিদুর রহমান বলেন, পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটা করার কোনও সুযোগ নেই। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




