বান্দরবানে একটি ব্রীজের অভাবে জনদুর্ভোগ চরমে

বান্দরবানের লামা উপজেলায় একটি ব্রীজের অভাবে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। ব্রীজ না থাকায় প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ী জনপদের বাসিন্দারা প্রায় ৪০ ফুট প্রস্থ খালের পানি পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছান। তবে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন স্কুল-মাদরাসা পড়–য়া কোমলমতি শিক্ষার্থী বয়োবৃদ্ধ স্থানীয়রা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের দূর্গম পশ্চিম বটতলী পাড়া বমুখালের এক পাড়ে বটতলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭০টি বসতি পরিবার। অন্য পাড়ে পূর্ব বটতলীপাড়া, তুলাতলী হামিদচর পাড়া, তুলাতলী মুরুং পাড়া, চিন্তাবরপাড়াসহ ৯টি পাড়ার প্রায় ৫ হাজার জনবসতি। প্রতিদিন দুই শতাধিক শিক্ষার্থীসহ শহস্রাধিক লোকজন এই ঝুঁকিপূর্ণ খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে ও বটতলীবাজার-গজালীয়া বাজারে যাতায়াত করে আসছে।

শিশু শিক্ষার্থীরা খালে নামার আগ থেকে আতঙ্কে থাকে। তবুও ফিরতে হবে স্কুল কিংবা বাড়ীতে। ৮-১০জন শিক্ষার্থী বাড়ী থেকে এসে খাল পার হচ্ছিল। প্রায় ৪০ ফুট চওড়া খালটি কোমর পানিতে পার হয় সবাই। তীরে উঠেই রোদে দেয় ভেজা জামা- কাপড়। গায়ে পড়ে স্কুলড্রেস। অবশেষে বই-খাতা নিয়ে ছুটে স্কুল-মাদরাসায়।

বটতলী পাড়ার গ্রাম সর্দার মনির উদ্দিন বলেন, আমাদের কাছে এই দৃশ্য নতুন কিছু নয়। ৪০ ফুট চওড়া এ খাল পার হতে কোন সেতু নেই। নৌকা পারাপারেও নেই কোন স্থায়ী ব্যবস্থা। বাধ্য হয়ে খাল সাঁতরে স্কুলে যায় শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘবছর ধরে এ অবস্থা চললেও খালে সেতু নির্মাণের জন্য কোন উদ্যোগ স্থানীয় প্রশাসন নিয়েছে কিনা আমরা জানিনা। জীবনবাজি রেখে এখানকার ৯টি পাড়ার প্রায় ৪ হাজার মানুষ ও ২শতাধিক শিক্ষার্থী এভাবে খাল সাঁতরে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া গত বছর বটতলী তালগাছতলা দুই পাড়ের একমাত্রা ঘাটটি খালের ভাঙ্গনে ভেঙ্গে যায়। ফলে বর্তমানে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ এখন পাড়ের ভাঙ্গা অংশে খাঁড়া পথ দিয়ে চলাচল করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ছগির উদ্দিন বলেন, গত বছর ১৫ নভেম্বর শীতের এই সময়ে শীতল পানিতে দুই শিশু সাঁতার কেটে পশ্চিম পাড়া আসছিলো। কিন্তু খালের মাঝখান থেকে নাজিম উদ্দিন নামে ১০ বছরের এক শিশু ভেসে যায়। সাথে থাকা শিশুটির চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এসে প্রায় ৩শত ফুট দূর থেকে ভেসে যাওয়া শিশুটি উদ্ধার করে।

0Shares