
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার আসমতপুর গ্রামে নবজাতক হত্যা মামলায় অবশেষে মা-মেয়ে গ্রেফতার হয়েছেন।
শুক্রবার (৩০ মে) পলাশবাড়ী থানা পুলিশ তাদের আটক করে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি আসমতপুর গ্রামের বালিয়াগাড়ী বিলে এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। পরে এলাকাবাসীর সন্দেহের ভিত্তিতে নবজাতকের মায়ের পরিচয় শনাক্ত হলে আসমতপুর গ্রামের শফিকুল মণ্ডলের ছেলে ইয়াসিন মণ্ডল বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে পলাশবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসমতপুর গ্রামের মঞ্জুরের মেয়ে ফাতেমা আক্তার ১৬ মে গাইবান্ধা সদরের রাবেয়া ক্লিনিকে ভর্তি হন। সেদিনই সে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। তবে ফাতেমা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে সন্তান জন্মের পর সামাজিক লজ্জা ও পরিচয় গোপন করতে গিয়ে ১৭ মে রাতে মা গোলাপি বেগম ও বাবা মঞ্জুরের সহযোগিতায় নবজাতক শিশুটিকে নাক-মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং শিশুটির মরদেহ বালিয়াগাড়ী বিলে ফেলে দেন।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পলাশবাড়ী থানা পুলিশ ৩০ মে ফাতেমা আক্তার ও তার মা গোলাপি বেগমকে গ্রেফতার করে। তবে অভিযুক্ত মঞ্জুর এখনও পলাতক রয়েছেন।
পলাশবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টা মা-মেয়ের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শনিবার (৩১ মে) তাদের গাইবান্ধা আদালতে হাজির করে জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করা হবে। ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত করা যাবে উদ্ধারকৃত নবজাতকের মরদেহ ফাতেমার কিনা।
উল্লেখ্য, ১৯ মে (সোমবার) সকালে আসমতপুর গ্রামের বালিয়াগাড়ী বিল থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিচয় অজ্ঞাত থাকায় স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সাহেব মিয়ার ছেলে মশিউর রহমান বাদী হয়ে পলাশবাড়ী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (মামলা নং-১৭, তারিখ: ১৯/০৫/২০২৫) দায়ের করেছিলেন। পরে ২০ মে (মঙ্গলবার) মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় এবং ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা নবজাতকের পিতৃপরিচয় শনাক্তের পাশাপাশি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।