
অনেকেই সকালবেলা ঘুমিয়ে থাকেন। আবার অনেকে রাতে দেরি করে ঘুমিয়ে সকাল ৯টা-১০টায় উঠেন। আবার অনেকে ফজরের নামাজের জন্য উঠলেও নামাজ পড়েই ঘুমিয়ে যান। মোটকথা, সকালের ঘুম যেন প্রিয় ও আরামদায়ক আমলে পরিণত হয়েছে অনেকের কাছেই।
অথচ আমরা কি কখনও খেয়াল করেছি, সকালের ঘুমে আমাদের কী ক্ষতি হচ্ছে? পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আমি তোমাদের নিদ্রাকে আরামের উপকরণ করেছি। রাতকে আবরণের (ঘুমের উপযোগী) বস্তু বানিয়েছি। আর দিনকে জীবিকা উপার্জনের সময় করেছি।’ (সুরা নাবা: ৯-১১)। আল্লাহ প্রদত্ত এই কর্ম ও বিশ্রামনীতিই মানুষের মন-মস্তিষ্ক ও শরীরের জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রাতে দেরি করে ঘুমান, তাদের শরীরে নানা সময় নানা রকম রোগ বাসা বাঁধে। এমন মানুষদের মানসিক ও শারীরিক রোগ বৃদ্ধি পায়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। অল্প বয়সে চুল পাকে ও পড়ে যায়। সুগারজনিত সমস্যা দেখা দেয়। চেহারা ও শরীরে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে। মস্তিষ্কের চেতনা সৃষ্টিকারী অংশের সঙ্গে তার সম্পর্ক কম থাকে। যার ফলে মেধা ও মস্তিষ্ক দুর্বল হয়ে যায়। স্মৃতিভ্রম রোগ দেখা দেয়। সহজেই অনেক কিছু ভুলে যায়। স্মরণশক্তি কমে যায়।
রাসুল (সা.)-এর হাদিস থেকেও জানা যায়, সকালবেলা আসমান থেকে রিজিক বণ্টন হয়। রিজিক মানে শুধু খাবার নয়, মানুষের যাপিত জীবনে যা কিছু প্রয়োজন সবই এর অন্তর্ভুক্ত।
আল্লাহতায়ালা সকালের সময়ে ও কাজে বরকত দান করেছেন। সকালে ঘুমিয়ে থাকা মানে দিনভর চলার তেল ও পুঁজি সংগ্রহ করার সুযোগ হারিয়ে ফেলা।
হজরত ইবনে ওমর ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আমার উম্মতের জন্য প্রত্যুষে বরকত দান করা হয়েছে। তিনি দোয়া করে বলেছেন, ‘হে আল্লাহ, আমার উম্মতের জন্য সকালবেলায় বরকত দান করুন। দিনের শুরু অংশকে আমার উম্মতের জন্য কল্যাণ আর বরকতময় করে দিন।’ সকালবেলা বরকতের ধারা বর্ষিত হয় বিধায় আল্লাহর রাসুল (সা.) যখন কোনো অভিযানে বাহিনী পাঠাতেন, তখন দিনের শুরুতে পাঠাতেন। সাহাবি হজরত সখর গামেদি (রা.) ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তার ব্যবসায়িক কার্যক্রম দিনের শুরুতে আরম্ভ করতেন। এতে তিনি অনেক লাভবান হন এবং ধনী হয়ে যান। (আবু দাউদ: ২৬০৬)।




