দিনাজপুরে জীবন মহল পার্কে হামলা : ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ

দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় জীবন মহল নামের একটি বিনোদন পার্কে হামলা-পাল্টা হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বেলা সাড়ে তিনটা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে এ সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় একজন সংবাদকর্মীসহ অন্তত ১২ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় দুটি মাইক্রোবাস ও  ৫ সংবাদকর্মীর মোটরসাইকেল। পরে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এর আগে গত ১৭ আগস্ট পার্কে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। অভিযানে দুজন নারী ও পাঁচজন পুরুষকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং পার্কের মালিক আনোয়ার হোসেন ওরফে জীবন চৌধুরীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। প্রায় এক যুগ আগে বিরলের কাঞ্চন মোড়ে পার্কটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পার্কে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে একপক্ষে জীবন চৌধুরীর সমর্থকেরা তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সমাবেশ ডাকেন। অন্যদিকে স্থানীয়দের একটি অংশ তৌহিদি জনতা ব্যানারে একই সময়ে তাঁর গ্রেফতারের দাবিতে সমাবেশের ঘোষণা দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা আড়াইটার দিকে জীবন চৌধুরীর সমর্থকেরা পার্কের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর অপর পক্ষ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পার্কের ভেতরে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

আনোয়ার হোসেনের সমর্থকরা জানান, প্রতিষ্ঠানে অভিযানের পর নানা অপপ্রচার শুরু হয়। বৃহস্পতিবার পরিকল্পিতভাবে বাইরে থেকে লোক এনে হামলা চালানো হয়েছে। এতে অন্তত দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

অন্যদিকে তৌহিদি জনতার পক্ষে মাওলানা হাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, জীবন মহলে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কাজ চলছে। আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে গিয়েছিলাম। কিন্তু জীবন চৌধুরীর সমর্থকেরা হামলা চালিয়ে আমাদের সাতজনকে আহত করেছে।

দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন জানান, সম্প্রতি সেখানে অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে অভিযান চালানো হয়। বৃহস্পতিবার স্থানীয়রা শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা জানিয়েছিল। তবে জীবন চৌধুরীর সমর্থকেরা বাইরে থেকে লোক এনে আক্রমণ চালালে সংঘর্ষ হয়। কোনো পক্ষ মামলা করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

0Shares