কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলায় মো. মঈন উদ্দিন (৪৮) ও মো. মগল মিয়া (৪৬) নামে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ভোর পৌনে ৫টার দিকে অভিযান পরিচালনা করে নিজ নিজ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মঈন উদ্দিন কুলিয়ারচর উপজেলার একরামপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে এবং মগল মিয়া সালুয়া ইউনিয়নের উত্তর সালুয়া গ্রামের মৃত মকরম হুসেনের ছেলে।
গত ২০২৪ সালের ৩০আগস্ট কুলিয়ারচর থানায় দায়ের করা একটি মামলার তদন্তে সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় থানা পুলিশ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের কুলিয়ারচরের বাজরা বাসষ্ট্যান্ডে শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলন করে ছাত্র-ছাত্রীরা। এসময় আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো একসাথে দেশীয় অস্ত্রাদীসহ আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল নিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ম্যাসকার চালায়। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান ও রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাল উদ্দিনের হুকুমে আসমীগণ নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর হামলা, দোকানপাট ভাংচুর, ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটপাট করে। তখন ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে এলে হামলাকারীরা ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করে। উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলামের নির্দেশে আন্দালনকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পরপর ৪টি ককটেল নিক্ষেপ করে হামলাকারীরা। তখন ছাত্র-ছাত্রীরা ছত্রভঙ্গ হয় এবং ককটেলের ধোয়ায় অসুস্থ হয়ে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেয় তারা।
ঘটনার ২৬ দিন পর ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট উপজেলার রামদী ইউনিয়নের আগরপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের মো. মজলু মিয়ার ছেলে অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র মো. নয়ন মিয়া বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসানকে প্রধান আসামি করে ২৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০০ জনের নামে মামলাটি দায়ের করেন।
এমামলায় ইতিপূর্বে আরো ১০-১৫ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। এদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে জামিনে আছেন।
কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হেলাল উদ্দিন পিপিএম এ মামলায় দুইজনকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেফতারকৃতদের শুক্রবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।