ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদি’র মৃত্যুতে সারা দেশে শোক, ক্ষোভ ও প্রতিবাদের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শহীদ ওসমান হাদির শাহাদাতের পর দেশের ছাত্র-জনতার মধ্যে যে ক্ষোভ ও আবেগ সৃষ্টি হয়েছে, তা ন্যায্য ও বোধগম্য। কিন্তু এই ক্ষোভকে পুঁজি করে কোনো পক্ষ যদি নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে, তা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা স্পষ্টভাবে আশঙ্কা প্রকাশ করছি- এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হতে পারে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিবৃতিতে আমীরে জামায়াত বলেন, সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক জনগণ মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছে এবং একই সঙ্গে তার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতার বিষয়টি নিয়ে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
আমীরে জামায়াত বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ এবং জনগণের কণ্ঠস্বর প্রকাশের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, গণমাধ্যমের ওপর হামলা মানে গণতান্ত্রিক চর্চা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের ওপর আঘাত। যে কোনো ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। নইলে মূল লক্ষ্য অর্জন ব্যর্থ হতে পারে।
তিনি বলেন, শহীদ ওসমান হাদির হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
আমীরে জামায়াত আরও বলেন, দেশের এই সংকটময় সময়ে সর্বোচ্চ সংযম, দায়িত্বশীলতা ও জাতীয় ঐক্যই হতে পারে সামনে এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে গণতান্ত্রিক, শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই শহীদদের আত্মত্যাগের যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করা সম্ভব। আমরা সকল দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা ও নাগরিককে ধৈর্য, সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহাদাত বরণ করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদি।