নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চাঁদা চাইতে গিয়ে গণপিটুনিতে সোহেল মিয়া (৩৫) নামে একজন ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন। এ সময় পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন আরও কয়েকজন। সোহেল জেলার পুরস্কার ঘোষিত মাদক কারবারি ছিল।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত সোহেল মিয়া ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও বালিয়াপাড়া এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া এলাকায় আব্দুল আউয়াল মৌলভীর ছেলে সায়েম মিয়া ৮টি দোকার ঘর তৈরি করছেন। সোহেল প্রত্যেক দোকান বাবদ এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। সোমবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সোহেল ও তার কয়েকজন সহযোগী সায়েমের বাড়িতে চাঁদা চাইতে যায়। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সোহেল কোমর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে। পাশের কয়েকজন নারী এ দৃশ্য দেখে দ্রুত মসজিদের ইমামকে জানান। মসজিদের ইমাম মাইকে চাঁদা দাবির ঘোষণা দিলে আশপাশের ৬০০-৭০০ লোক একত্রিত হয়ে ঘেরাও করে তাকে গণপিটুনি দেয়। এতে সোহেল ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এসময় তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
প্রসঙ্গত, এর আগেও গত ৭ সেপ্টেম্বর চাঁদা চাইতে গিয়ে এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে সোহেল ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসির উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ মর্গে পাঠিয়েছে। সোহেল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আড়াইহাজার থানাসহ বিভিন্ন থানায় মাদক, মারামারিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করে ফের মাদক চোরাকারবারে জড়ায় সোহেল। এ নিয়ে এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ ছিল।
স্থানীয়রা জানায়, সোহেল মিয়া ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গত ইউপি নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়। এরপর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠে। অবৈধ মাদক সেবন ও কারবারে জড়িয়ে পড়ে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় তার লোকজন। সোহেল জেলার পুরস্কার ঘোষিত মাদক বিক্রেতা ছিল।
স্থানীয়রা আরও জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিশেষ অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে বিএনপির একাংশের সঙ্গে মিশে যায়।