বলাৎকার পরবর্তী হত্যার অভিযোগে শিশু সাজিদের মরদেহ উত্তোলন

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায়  দাফনের ২০ দিন পর কবর থেকে এক মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ তোলা হয়েছে। মৃত ছাত্রের পিতার দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য এ মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।

সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে লোহাগাড়া উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন লায়েল, লোহাগাড়া থানার ওসি মোঃ আরিফুর রহমান ও মামলার আইও চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মোঃ আব্বাস উদ্দীনের উপস্হিতিতে উপজেলার লোহাগাড়া সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সোয়ারী বর জামে  মসজিদ সংলগ্ন কবরস্হান থেকে মরদেহটি তোলা হয়।

নিহত তাসনিমুল হাসান সাজিদ (১৫) উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের সামসুদ্দিন মাস্টার বাড়ির মাঈনুদ্দীন আজাদের ছেলে। সে হাফেজে কোরআন এবং আধুনগর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্র ছিল।

অভিযোগে জানা যায়, গত ২৪ জুলাই বিকেলে সাজিদ প্রতিদিনের ন্যায় সদর উপজেলার সাতগড়িয়া পাড়ার শরীয়ত উল্লাহ জামে মসজিদ সংলগ্ন একটি কক্ষে মোয়াজ্জিন নাছির উদ্দিনের কাছে পড়তে যায়। বিকেল সাড়ে ৪টায় সাজিদের মা তসলিমা আক্তারকে শিক্ষক নাছির উদ্দিন ফোনে জানান- তার ছেলে সাজিদ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে পাশের পরিত্যক্ত জমিতে মারা গেছে।

সাজিদের পিতা মাঈনুদ্দীন আজাদের অভিযোগ, আসামিরা সাজিদ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে তাড়াহুড়ো করে লাশ দাফন করেন। শিশুটির মৃত্যুর খবর পেয়ে শিক্ষক নাছির উদ্দিন পালিয়ে যান। পরবর্তীতে বিভিন্নসূত্রে জানতে পারেন শিশুটির শরীরে কোনও বিদ্যুৎস্পৃষ্টের চিহ্ন ছিল না। তিনি অভিযোগে জানান, শিক্ষক নাছির উদ্দিন বলাৎকারের পর মুখে বালিশ চাপা দিয়ে সাজিদকে হত্যা করেন।

এই ঘটনায় ৭ দিন পর, গত ১জুলাই শিশুর পিতা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলাটি এজাহার (এফআইআর) হিসেবে নথিভুক্ত করার জন্য লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

মামলায় আসামি করা হয়েছে শিশুটির আরবি শিক্ষক ও স্থানীয় একটি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন নাছির উদ্দিন (৩৭) ও নানা আবুল হোসেন (৫৫)-কে।

লোহাগাড়া থানার ওসি আরিফুর রহমান জানান, আদালতের নির্দেশে লোহাগাড়া  উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটে’র উপস্থিতিতে কবর থেকে শিশুর মরদেহটি উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

0Shares