
চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার মধ্যবর্তী সীমানায় স্থাপিত তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল আদায় নিয়ে জনমনে ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অংশীজন সভায় স্থানীয় সচেতন সমাজ টোলের বিরুদ্ধে তাদের জোরালো অবস্থান তুলে ধরে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, সচেতন নাগরিকেরা অভিযোগ করেছেন, গত ১৮ বছর ধরে সরকারি নির্ধারিত হারের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টোল আদায় করা হয়েছিল। অনেক সময় টোলের রশিদও দেওয়া হত না। ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতু থেকে এরইমধ্যে ৯০ কোটি টাকার বেশি টোল আদায় করা হয়েছে, যা নির্মাণ ব্যয়ের প্রায় তিন গুণ। এরপরও টোল আদায় অব্যাহত রাখা অযৌক্তিক এবং অন্যায়।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ অংশীজন সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান, বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জসিম উদ্দিন, রামদাস হাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ তপন কুমার বাকচি, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট নাছির উদ্দিন, বাঁশখালী প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব মিজান বিন তাহের, গুনাগরি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী, মিয়ার বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মৌলানা হামেদ, এডভোকেট আরিফুল হক তায়েফ, মো. নিজাম উদ্দিন, গোলাম ছরওয়ার চৌধুরী, বাস মালিক সমিতি প্রতিনিধি নাজিম উদ্দীন ও ছাত্র সমন্বয়ক প্রতিনিধি ইমরানুল কাদের চৌধুরী জিসানসহ ইজারাদারের লোকজন।
অন্যদিকে, আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল বাতিলের দাবিতে বাঁশখালী ও আনোয়ারার সচেতন সমাজ বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, গণস্বাক্ষর এবং স্মারকলিপি প্রদান করে আসছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারে পতন পরবর্তী ছাত্রজনতার প্রতিরোধের মুখে পিছু হটে টোল আদায়কারীরা।
সম্প্রতি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে পুনরায় টোল আদায়ের নির্দেশনা আসায় জনমনে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সচেতন সমাজ এই নির্দেশনা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল আদায় স্থায়ীভাবে বন্ধে সরকারের প্রতি দাবি জানান।